পুরনো চিন্তায় নয়, নতুন কাঠামোয় গড়ে উঠবে ভবিষ্যতের বিশ্ব: ড. ইউনূস”

এনএস ডেস্ক

একটি সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মতে, প্রচলিত ধ্যানধারণা দিয়ে ভবিষ্যতের বিশ্ব নির্মাণ সম্ভব নয়। বেইজিংয়ে চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বার্তা দেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যতই পুরোনো কাঠামো ধরে সামনে এগোতে চাই না কেন, তা টিকছে না। একটি কার্যকর ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ার জন্য আমাদের একেবারে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। তিন শূন্য তত্ত্বের মধ্যেও সেই চিন্তার ভিত্তি রয়েছে।”

সাক্ষাৎকারে তাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আধুনিকীকরণ ধারণা ও তাঁর ‘তিন শূন্য’ তত্ত্বের মধ্যে সম্পর্ক আছে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “উদ্দেশ্য একটাই—একটি শান্তিপূর্ণ ও সমন্বিত বিশ্ব গড়া। ভাষার পার্থক্য থাকতে পারে, তবে দৃষ্টিভঙ্গির মিল রয়েছে।”

চীন সফরের সময় ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন চীনা সমাজবিজ্ঞান একাডেমির গ্রামীণ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড্যু। তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকেই ইউনূসের কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বাংলাদেশে গিয়ে তাঁর কাজ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

“গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল শুধু বাংলাদেশেই নয়, চীনের বিভিন্ন অঞ্চলেও অনুকরণ করা হয়েছে,” বলেন ড্যু। “দারিদ্র্য বিমোচনে ইউনূস যে ভূমিকা রেখেছেন, তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত।”

বৈঠকে ইউনূস বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং বলেন, “বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে আমরা প্রস্তুত। চীনের সহায়তা পেলে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারি।”

২০২৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউনূস। তিনি বলেন, “এই সম্পর্ক শুধু কূটনৈতিক স্তরে নয়, অর্থনীতি, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতেও গভীরভাবে বিস্তৃত হতে পারে।”

তিনি আরও জানান, চীন সফরকালে চীনা নেতাদের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে এবং তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। “আমরা চাই নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এই সম্পর্ক একটি বড় সহায়ক হোক,” বলেন তিনি।