উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের

এনএস ডেস্ক 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরিকল্পনাকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকারের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। এই সিদ্ধান্তটি উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে গৃহীত হয় এবং সরকার এখন থেকেই ওই চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই উত্তরণ দেশের মর্যাদা বাড়াবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য যে তিনটি প্রধান সূচক—মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক, এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা—এর মধ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সবগুলো মানদণ্ড পূরণ করেছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার, যা মানদণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া, মানবসম্পদ সূচকেও বাংলাদেশ ৭২.৯ পয়েন্ট অর্জন করেছে, যা যথেষ্ট সন্তোষজনক। এই অর্জনের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা লাভ করেছে এবং জাতিসংঘের সিডিপি দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে, এই উত্তরণ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে নতুন সরকার কিছু সমালোচনা এবং ভুয়া তথ্যে ভিত্তি করার অভিযোগ করেছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগের সরকারের শাসনামলে গৃহীত উন্নয়নমূলক পরিসংখ্যান এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্যগুলো প্রমাণিতভাবে ভুয়া ছিল, এবং সে কারণে বাংলাদেশ এই তথ্যগুলোকে খারিজ করেছে। সরকারের মতে, এই তথ্যে কারচুপি এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বিকৃত করা হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য সঠিক পথে এগোচ্ছে, তবে কয়েকটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন ঋণ গ্রহণ এবং বৈদেশিক নির্ভরতা বৃদ্ধি। তিনি আরও জানান, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস কমে গেছে এবং কর-জিডিপি অনুপাত ৭ শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

তবে সরকারের আশাবাদী মনোভাব এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জাতিসংঘের সিডিপির অনুমোদনের জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সম্ভাবনা উজ্জ্বল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার প্রস্তুতি নিয়ে চলছে যাতে বাংলাদেশের উন্নয়নমুখী যাত্রা সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারে এবং বিশ্বে আরও শক্তিশালী একটি অবস্থান অর্জন করতে পারে।