ধনী-গরিব ভেদাভেদ নেই, সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার

মে.হো ১২ মার্চ ২০২৫ ১১:২৬ এ.এম

ছবি : সংগৃহীত

এনএস ডেস্ক : প্রতিদিন শত শত রোজাদারকে একসঙ্গে বিনামূল্যে ইফতার করানোর এক অনন্য দৃষ্টান্ত দেখা যায় বগুড়া শহরের স্টেশন রোডের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল জামে মসজিদে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে ৬০০-৭০০ মানুষ একসঙ্গে বসে ইফতার করেন, যা চলে আসছে প্রায় দেড় যুগ ধরে।

এই মসজিদের ইফতার আয়োজনের বিশেষত্ব হলো, সবাই এক প্লেটের চারপাশে বসে পরস্পরের সঙ্গে ইফতার ভাগ করে নেন। এখানে সামাজিক অবস্থান কিংবা পরিচয়ের কোনো ভেদাভেদ নেই—সবাই একইভাবে ইফতারের সুযোগ পান।

জোহরের নামাজের পর থেকেই স্বেচ্ছাসেবকরা ইফতারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। আসরের পর তারা প্লেটে ইফতার সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইফতারের মেনুতে থাকে খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি, জিলাপি, শরবত ও বিশেষভাবে রান্না করা বিরিয়ানি বা খিচুড়ি। ইফতারের আধা ঘণ্টা আগে থেকেই মুসল্লিরা সারিবদ্ধভাবে বসতে শুরু করেন, আর মসজিদের খাদেম ও স্বেচ্ছাসেবকরা ইফতার পরিবেশন করেন।

এই মহতী উদ্যোগের জন্য রমজানের শুরুতেই স্থানীয় মুসল্লি ও ব্যবসায়ীরা তহবিলে অনুদান দেন। এ বছর প্রায় ২৬ লাখ টাকা সংগ্রহ হয়েছে, যা দিয়ে পুরো রমজান মাসের ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে।

মসজিদ কমিটির সদস্যদের মতে, ২০০৮ সালে এই মসজিদে নামাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই সম্মিলিত ইফতার আয়োজন চালু করা হয়। এটি শুধু ইফতার নয়, বরং সাম্যের বার্তা ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ইফতারে অংশ নেওয়া রিকশাচালক আলম মিয়া বলেন, "এখানে ইফতার করলে অন্য রকম আনন্দ লাগে, ধনী-গরিব সবাই একসঙ্গে বসে খাবার ভাগ করে খাচ্ছে।"

একইভাবে কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, "বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন এখানে ইফতার করতে আসি। এই পরিবেশ অন্যরকম। এখানে ইফতার শুধু খাবার নয়, বরং পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।"

স্থানীয় ব্যবসায়ী আজমল বাহার বলেন, "যাদের ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই, তারাও এখানে এসে নিশ্চিন্তে ইফতার করতে পারেন। এটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।"

এভাবেই বছর ধরে চলে আসা এই আয়োজন শুধু রোজাদারদের তৃপ্তিই দেয় না, বরং ইসলামের সাম্যের শিক্ষা ও সম্প্রীতির বন্ধনকে দৃঢ় করে।

বগুড়া ইফতার