সুন্দরবন সংরক্ষণে বাপার ১০ দফা দাবি

এনএস ডেস্ক
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ১৪ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় সুন্দরবন রক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং সুন্দরবন সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে এই দাবিগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

বাপার ১০ দফা দাবি:
১. সুন্দরবনের জন্য মিঠা পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা— উজানের দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।

২. সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্পগুলো বাতিল করা— বন সংলগ্ন সব ধরনের শিল্প ও আবাসন প্রকল্প বন্ধ করতে হবে।

৩. অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধ ও অপসারণ— সুন্দরবনের ভেতর বা আশপাশে যেসব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

৪. বন সংলগ্ন শিল্পাঞ্চল ও প্লট বরাদ্দ বাতিল— বনের কাছাকাছি গড়ে ওঠা কলকারখানা ও শিল্পাঞ্চল অপসারণ করতে হবে।

৫. অপরিকল্পিত গাছকাটা ও প্রাণী শিকার বন্ধ— বন্যপ্রাণী হত্যা ও বিষ প্রয়োগে জলজ প্রাণী নিধন কঠোরভাবে দমন করতে হবে।

৬. নৌ-চলাচল সীমিতকরণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ— সুন্দরবনের নদী ও খালগুলোতে ভারী নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া নৌযান দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

৭. সুন্দরবনের পোল্ডার অপসারণ— পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে বনের অভ্যন্তরে তৈরি কৃত্রিম বাঁধ বা পোল্ডার অপসারণ করা জরুরি।

৮. বন বিভাগের জনবল বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়ন— বন রক্ষায় প্রয়োজনীয় জনবল বাড়ানো ও কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ করতে হবে।

৯. কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল— রামপালসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কয়লা প্রকল্প বাতিল করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিতে হবে।

১০. পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করা— বন উজাড় না করে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

নেতাদের বক্তব্য:
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেছেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ বনভূমির ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট থাকলেও বাংলাদেশের বনভূমির পরিমাণ ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন করা হলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি বেশি হবে।’

সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেছেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ভারসাম্য নষ্ট করেছে। খাল ও নদীগুলোতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না, বনের গাছের পাতায় ছাই জমছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।