মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
আন্তর্জাতিক

শপথ নিয়েই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করতে চান ট্রাম্প

কেবি ২০ জানু ২০২৫ ০৩:০৩ পি.এম

শপথ নিয়েই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল চান ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনই ২০০ নির্বাহী উদ্যোগে সইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প।  গত নভেম্বরে বিজয়ের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা নিতে চলছেন এক কালের আবাসন ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সোমবার (২০ জানুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে। 

শপথ নিয়েই এসব নির্বাহী উদ্যোগে সই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি সমর্থকদের জানান, 'ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতবেগে ও শক্তিমত্তার সঙ্গে' এগিয়ে যাবেন তিনি।

নির্বাহী আদেশগুলো আইনের সমতুল্য হলেও বাকিগুলো প্রেসিডেন্সিয়াল ঘোষণা ও নির্দেশনা হিসেবে থাকবে। সেগুলো আইন নয়।

গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে ‘অস্বস্তিতে’ রাশিয়া-ইইউ
গতকাল ওয়াশিংটন ডিসির অ্যারেনায় বিজয় সমাবেশে তিনি বাইডেন প্রশাসনের 'ভুলে ভরা' সব আদেশ বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাশাপাশি অভিবাসন, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্রনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একাধিক আদেশে সই দেবেন ট্রাম্প।

অবৈধ অভিবাসন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় উচ্চকণ্ঠ ছিলেন ট্রাম্প। তিনি এবার ঘোষণা দিয়েছেন—অবৈধ অভিবাসীদের 'ঘাড় ধরে' নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সবচেয়ে বড় কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্পের দাবি, তার উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করবেন। সামরিক বাহিনীকে মেক্সিকোর সঙ্গে দেশটির দক্ষিণ সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেবেন।

মার্কিন আইন অনুযায়ী, গির্জা ও স্কুলে কেন্দ্রীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযান পরিচালনা করতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই আইন বাতিলের কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবধারিতভাবে, এ ধরনের কোনো অভিযানে লজিসটিক সমস্যা দেখা দেবে। পাশাপাশি, হাজার কোটি ডলার খরচ ও আইনি ঝামেলাও চলতে থাকবে।

প্রথম মেয়াদে 'মেক্সিকোতেই থাকো' (রিমেইন ইন মেক্সিকো) নীতির মাধ্যমে ৭০ হাজার মানুষকে মেক্সিকো ফেরত পাঠিয়েছিলেন। এই নীতির আওতায়, মেক্সিকো থেকে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে এসে আশ্রয় চাইলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে আশ্রয় না দিয়ে আবারও মেক্সিকো ফেরত পাঠানো হয়। শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারেন না। প্রথম মেয়াদে চালু এই নীতি প্রচুর সমালোচনা হয়। ২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসন তা বাতিল করে। ট্রাম্প আবারও তা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল :
প্রায় ১৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া শিশুরা 'জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব' পেয়ে আসছেন। ট্রাম্প এই সাংবিধানিক অধিকারকে 'হাস্যকর' বলে অভিহিত করেছেন। তার মেয়াদের প্রথম দিনই এই আইন বাতিলের কথা জানিয়েছেন।

নির্বাহী আদেশেই কার্যসিদ্ধি হবে না বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন সংবিধানে পরিবর্তন না এনে এই আইন বাতিল করা সম্ভব নয় বলেই তাদের মত।

ট্রাম্প মাদকচক্রগুলোকে হামাস ও আল-কায়েদার মতো 'বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের' তকমা দিতে পারেন। এই আদেশের ফলে মেক্সিকোয় মাদকচক্রকে শায়েস্তা করতে ট্রাম্প সেনা মোতায়েনের সুযোগ নিতে পারবেন।

ক্ষমতা গ্রহণের আগেই ট্রাম্পের বাণিজ্য ও অর্থনীতি সংক্রান্ত চিন্তাধারা সাড়া ফেলেছে। অনেকের মত, ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকির যুতসই জবাব দিতে না পারা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রূডোর পতনের অন্যতম কারণ। প্রথম দিনেই অর্থ-বাণিজ্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আদেশে সই করতে পারেন ট্রাম্প।

আমদানিতে শুল্কের বোঝা : 
ইতোমধ্যে ট্রাম্পের 'শুল্ক যুদ্ধ' বা 'ট্রাম্প শুল্ক' নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। নতুন প্রেসিডেন্টের অঙ্গীকার আমদানি করা সব পণ্যকে দামি বানিয়ে মার্কিন পণ্য বিক্রিতে উৎসাহ দেবেন তিনি। মার্কিন শিল্পকে দেবেন অগ্রাধিকার।

প্রথম মেয়াদে চীনা পণ্যের ওপর বড় আকারে শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। বাইডেন সরকার তা অব্যাহত রাখে।

এবার ট্রাম্প বলছেন, সব আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

আলাদা করে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ এবং চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

জানিয়েছেন, প্রথম দিন থেকে এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্বাহী আদেশে সই করবেন তিনি।

তবে এসব শুল্ক আরোপে ভোক্তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে বড় আকারে বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি। ইতোমধ্যে কানাডা ও মেক্সিকোর মতো কয়েকটি দেশ প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক আরোপের কৌশল বিবেচনা করছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আনুষ্ঠানিক মুদ্রা হিসেবে চালু করতে পারেন ট্রাম্প। তিনি বরাবরই ক্রিপ্টোকারেন্সির পক্ষে কথা বলেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের মূল্য বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মত, ট্রাম্প দ্রুত কেন্দ্রীয় 'বিটকয়েন রিজার্ভ' তৈরি করবেন। এটি স্বর্ণ ও তেলের রিজার্ভের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অপর কৌশলগত রিজার্ভে পরিণত হবে।

বিশেষত, গত দুই বছর ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের প্রায় পুরোটা সময় এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কার্যদিবসের বড় অংশ দখল করে রেখেছিল।

ট্রাম্পের দাবি, শপথ নিয়েই তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে ছয় মাস সময়ের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম কর্মদিবসে ইউক্রেন নিয়ে কী করবেন ট্রাম্প, এখনো তা স্পষ্ট নয়। তবে ট্রাম্প এ ক্ষেত্রে চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত বা উদ্যোগ দেখা গেলে অবাক হওয়ার কারণ নেই।

বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি জঙ্গি রাষ্ট্রের তালিকা থেকে কিউবাকে বাদ দিয়েছে। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত পালটে দিতে পারেন ট্রাম্প।

তার প্রথম মেয়াদেও এই দুই দেশকে তার আগ্রাসী মনোভাবের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চালুর পর ২৪ ঘণ্টাও পার হয়নি। যদিও দীর্ঘদিন ধরে এই আলোচনা চলছিল, তবুও এই চুক্তির কৃতিত্ব দাবি করেছেন ট্রাম্প। বলছেন, তিনি চাপ না দিলে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হোত না। 

সব মিলিয়ে বলা যায়, ২০ জানুয়ারি শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় পুরো বিশ্বের জন্য ঝঞ্জাবিক্ষুদ্ধ্ব দিন হতে যাচ্ছে।

সূত্র : ডেইলী স্টার 

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ‘সম্পূর্ণ বাতিল’ চায় চীন

news image

ইরানে ৮ পাকিস্তানিকে গুলি করে হত্যা

news image

এবার মার্কিন পণ্যের শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করলো চীন

news image

নিউইয়র্কে নদীতে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, শিশুসহ ৬ জনের প্রাণহানি

news image

ডোমিনিকান রিপাবলিকে নাইট ক্লাবের ছাদ ধসে নিহত ৬৬, আহত ১৫৫

news image

৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

news image

বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

news image

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে যা জানালেন ট্রাম্প

news image

গাজা থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলি শহরে আতঙ্ক

news image

ইসরায়েলকে শক্তিশালী করছে কারা? মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর দ্বিমুখী ভূমিকা

news image

আরব বিশ্বের নীরবতা, গাজার পাশে দাঁড়ালো আমেরিকা

news image

‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানে মুখর যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথ

news image

গাজায় ১৫ স্বাস্থ্যকর্মীর হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার ইসরাইলের

news image

বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

news image

ওড়িশায় বাংলাদেশি পর্যটকবাহী বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১৫

news image

গাজায় প্রতিদিন ১০০ শিশু হতাহতের শিকার : জাতিসংঘ

news image

ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর হামলায় নিহত ১৮ 

news image

সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট আয়ারল্যান্ডের

news image

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত

news image

সাংবিধানিক লঙ্ঘনের দায়ে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিদায়

news image

দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে কত শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র

news image

নরেন্দ্র মোদির অবসর নিয়ে জল্পনা, উত্তরসূরি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে

news image

ভারতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে পাইলটের মৃত্যু

news image

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে প্রাণহানি বেড়ে ২৮৮৬ জন

news image

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি করোনায় আক্রান্ত

news image

গাজার ‘বিস্তৃত এলাকা’ দখলের পরিকল্পনা ইসরাইলের

news image

মার্কিন পরিকল্পনায় বাধা: উপসাগরীয় মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা

news image

মিয়ানমারে ৭ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা

news image

প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন মোদি

news image

সৌদিসহ ১১ দেশে আজ ঈদ