মঙ্গলবার ২১ জানু ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

৬ মাঘ ১৪৩১বঙ্গাব্দ
বিশেষ প্রতিবেদন

আ. লীগের হাইব্রিডরা হাওয়া, তৃণমূল ঘরছাড়া

কেবি ১৪ সেপ্টেম্বার ২০২৪ ০৬:৪৭ পি.এম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা-ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দলের হাইব্রিড নেতা-কর্মীরা হাওয়া হয়ে গেছেন। অথচ এই লোভী নেতা-কর্মীদের কারণে দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে চরম মাশুল দিতে হচ্ছে। নানা উপায়ে 

আওয়ামী লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবহার করে এই গোষ্ঠী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দলকে ব্যবহার করে নানা ধরণের অপকর্ম করতেও পিছপা হয়নি। এই হাইব্রিডদের বিষয়ে বারবার তৃণমূল থেকে অভিযোগ উত্থাপিত হলেও সেগুলো আমলে নেননি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছেন। একদিকে হাইব্রিডদের উত্থান, অন্যদিকে তাদেরকে নিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভ আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির এক কেন্দ্রীয় নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগকে ধীরে ধীরে হাইব্রিডরা দখল করে নেয়। ফলে তৃণমূল অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসব বিষয়ে বারবার অভিযোগ করা হলেও সেগুলো আমলে নেয়া হয়নি। ফলে দলের সৎ-ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা একসময় অভিমানে নিঃশ্চুপ হয়ে যান। 

এদিকে দলপ্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় এবং কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে থাকায় দলটির তৃণমূল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তারা এখন কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। দলপ্রধান শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হলেও তৃণমূল নেতারা টু-শব্দটিও করতে পারছেন না। উল্টো প্রাণভয়ে অনেকে এখন ঘরছাড়া বলে জানা গেছে। নেতাদের একাংশ প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করলেও সফল হতে পারছেন খুব কম সংখ্যক। ফলে দিন যতো যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ততোই বেড়ে চলেছে। 

প্রায় ১৬ বছর টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ কবে নাগাদ এ বিপদ মোকাবিলা করে পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে দাঁড়াতে পারবে তাও এ মুহূর্তে নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সৎ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীরা চোখে অন্ধকার দেখছেন। তারা শুধু সময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন। নিজেদের সবকিছু হারিয়েও অনেক নেতা-কর্মী চাইছেন, আওয়ামী লীগ আবার ঘুরে দাঁড়াক। কিন্তু অব্যাহতভাবে হওয়া মামলা ও দুর্নীতির পাহাড়সম অভিযোগ ঠেলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কতটা শক্তিশালীভাবে নতুন যাত্রা শুরু করতে পারবেন, তা নিয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে। 

এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও প্রায় সবার সেলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক নেতা বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগকে যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে, তা কল্পনাতীত। দলের কোনো নেতা-কর্মীই এমন পরিণতির কথা ভাবেননি। এখন সময়ের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।

এই সম্পর্কিত আরও খবর