নিউজ ডেক্স ২০ মে ২০২৪ ০৫:০৫ পি.এম
বৃষ্টি এলে রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। ঠান্ডা লাগা থেকে শুরু করে পেটে ব্যথা, কিছু না কিছু লেগেই থাকে এই মৌসুমে। প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে বর্ষাকালে যে সমস্যাটা বেশি দেখা দেয় সেটি হলো কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ।
ভাইরাস অথবা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া চোখে বাসা বাঁধলে এ সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাসজনিত রোগটি শীত ও গরমের মাঝামাঝি বেশি হয়। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ার কারণে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ৭ থেকে ১০ দিন পর চলে যায়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। সাধারণত যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন- বয়স্ক ও শিশুদের বেশি হচ্ছে। রোগটি একই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কমিউনিটিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরোগের লক্ষণগুলো হলো-
লক্ষণ
*চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া।
*চোখে ব্যথা, খচখচ করা ও অস্বস্তি অনুভব করা।
*প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে।
*চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে।
*চোখ ফুলে লাল হয়ে যায়।
*চোখ চুলকাতে থাকে। চোখে আলো পড়লে খুব অস্বস্তি লাগে।
প্রতিরোধের উপায়
অসুস্থ ব্যক্তিকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতে হবে জানিয়ে চিকিৎসকরা বলেন, যার চোখ ওঠা সমস্যা দেখা দিবে, সে পরিবারের অন্যদের থেকে সে আলাদা থাকবে। অসুস্থতার মধ্যে অন্য ইনফেকশন হলে রোগীর জটিলতা তৈরি হয়। এজন্য এ সময়ে আলাদা জীবন-যাপন করলে নিজে এবং অন্যরা ভালো থাকবে।
অসুস্থ অবস্থায় সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, শিশুর কনজাংটিভ হলে বিদ্যালয়ে না পাঠানো, কর্মজীবী হলে কর্মস্থলে না যাওয়া। এতে দ্রুত পরিত্রাণ মিলবে।
জনবহুল স্থানে দ্রুত ছড়ায়
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের গ্লুকোমা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির মেডিভয়েসকে বলেন, চোখ ওঠা রোগকে ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। এটা সিজনাল একটি রোগ। ঋতু পরিবর্তনের ফলে ভাইরাল ইনফেকশন হচ্ছে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হিউমিডিটির (বাতাসে থাকা পানির মাত্রা) পরিবর্তন হয়। হিউমিডিটি বেশি হলে ভাইরাল রোগগুলো বেশি ছড়িয়ে পড়ে। এটি ছোঁয়াচে রোগ। বাংলাদেশের মতো জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশে এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র অন্যজনে ব্যবহার করার কারণে সংক্রমণ বেড়ে যায়। যেমন- বাসার তোয়ালে, বালিশ এগুলো একে অন্যেরটা ব্যবহার করে। স্কুলে বাচ্চারা একেবারে গাদাগাদি করে বসে। ফলে একজন আক্রান্ত হলে অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ সংক্রমণটি দ্রুত ছড়ায়। তবে এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না।
আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এ চক্ষু বিশেষজ্ঞ বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কম বেশি সকলের এ রোগ হয়ে থাকে। যেহেতু এটি ভাইরাল রোগ, তাই নির্দিষ্ট জীবন চক্র শেষে ভাইরাসটি শেষ হয়ে যায়।
সর্তকতা
১.আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে, বালিশ, খাবারের প্লেট ও পানির গ্লাস আলাদা করতে হবে।
২.চোখে যাতে সরাসরি আলো না পড়ে, এজন্য সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে।
৩.চোখে ঠাণ্ডা শেক দিতে পারেন।
৪.চোখ চুলকাবেন না।
৫.এক চোখে সমস্যা দেখা দিলে অন্য চোখকে সংক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখতে হবে।
৬.আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।
৭.হ্যান্ডশেকের মাধ্যমেও অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। তাই হ্যান্ডশেক করার পর দ্রুত হাত ধুয়ে ফেলুন। নোংরা হাতে কখনোই চোখে হাত দেবেন না।
৮.সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখে পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
৯.চোখে সাবধানে টিস্যু বা নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহার করা সেই টিস্যু বা কাপড় সাবধানে নিরাপদ স্থানে ফেলতে হবে, যাতে এ রোগ অন্য কারো না হয়।
চিকিৎসা
চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে গেলে, চোখে ব্যথা করলে, খচখচ করা বা অস্বস্তি লাগলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে দিয়েছেন, নিম্নোক্ত চিকিৎসার পরামর্শ-
*এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে, যাতে অন্যকোন ব্যাকটেরিয়া না ঢুকতে পারে।
*ঘনঘন ড্রপ দিলে চোখের ময়লা বের হয়ে যাবে, এতে রোগীর আরাম লাগবে।
*ব্যথা থাকলে পেইন কিলার হিসেবে প্যারাসিটামল খাবেন।
এ রোগটি সিজন পরিবর্তনের সময় বেশি হয়। সিজনটা যেহেতু পরিবর্তন হচ্ছে, তাই এ সময় চোখে যাতে ধুলাবালি প্রবেশ না করে, ধোঁয়া না লাগে ও কেমিক্যাল না ঢুকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তবে চোখ ওঠা রোগ থেকে বাঁচতে সামান্য কিছু খাবার নিজের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ খাবারগুলো শুধু আপনার চোখকে সুস্থ রাখবে তা নয়, আপনার শরীরের অন্যান্য সমস্যাকেও দূর করে দেবে।
সবুজ শাকসবজি
সবুজ শাকসবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে বিশেষ করে যদি পালং শাক, কালে, পার্সলের মতো শাকসবজি খেতে পারেন।
সবজি
ভিটামিন এ চোখের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন এ রয়েছে এমন সবজি খেলে রোগ সংক্রমণের শঙ্কা অনেকটা কমে যায়। চোখকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন গাজর, মিষ্টি আলু, পেঁপে, কুমড়ো, অ্যাপ্রিকট খেতে হবে। এগুলোর মধ্যে থাকে বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবজির পাশাপাশি খেতে হবে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল। বাতাবি লেবু, বেল খেলে চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এই ফলগুলোর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের সব সমস্যা দূর করে দেয়।
ডিম
ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, জিংক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি চোখকে যে কোনো সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। তাই দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখার জন্য প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে ডিম।
বাদাম
বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন আমন্ড, আখরোটে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
মাছ
স্যালমন, সার্ডিন, টুনা মাছ, যেগুলোতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলো খেলে চোখ সুস্থ থাকে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
নবীন নিউজ/জেড
দেশের সব হাসপাতালে হচ্ছে সরকারি ফার্মেসি, মিলবে কম দামে ওষুধ
যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে দেশ
খাদ্যে ক্ষতিকর উপাদান শনাক্তে কঠোর নীতিমালার আহ্বান
অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাজেট বৃদ্ধির আহ্বান
‘নতুন মহামারির’ হানা যুক্তরাষ্ট্রে, মৃত্যুহার ৩৯ শতাংশ
বন্ধ হতে পারে সরকারি ৬ মেডিকেল কলেজ
বকশিশ না দেওয়ায় অক্সিজেন বন্ধ, নবজাতকের মৃত্যু
২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে
বরুণ ফুলের ঔষধি গুণ—প্রাকৃতিক চিকিৎসার এক বিস্ময়
স্বাস্থ্য ক্যাডারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শুরু
অব্যবস্থাপনা ও লুটপাটে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে: ডা. ফরহাদ হালিম
দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত
দেশের সব মেডিকেল কলেজে ‘একাডেমিক শাটডাউন’ সোমবার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাস শনাক্ত, মহামারির শঙ্কা
শোল্ডার সার্জারির উন্নয়নে বাংলাদেশে বিশেষ কর্মশালা
ফিরে দেখা: ‘ভারতে মেয়েদের জন্য ৬ মাসের মধ্যে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন’
আজ বায়ুদূষণে বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা
বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ঢাকার বাতাস, জানালা বন্ধের পরামর্শ!
অস্বচ্ছল চক্ষু রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান
জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি নারী প্রতি বছর মারা যান
এইচএমপিভি ভাইরাস সুরক্ষায় করণীয়
দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্তে প্রথম মৃত্যু
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের বিকল্প তিন খাবার
এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে
দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকাবাসী, মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা
দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
গোমস্তাপুরে নার্সের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু, তিন নার্স সাময়িক বরখাস্ত
দেশে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশু-বয়স্করা
শ্বাসতন্ত্রে নতুন ভাইরাস: বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা নতুন মহামারির