প্রাচীনকাল থেকে মৌমাছি মানুষের নিকট অতি পরিচিত এক প্রকার ক্ষুদ্র, উপকারী ও পরিশ্রমী পতঙ্গ। মধু তৈরির জন্য মৌমাছিরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে। মৌমাছি ফুল খোঁজা থেকে মধু সংগ্রহ পর্যন্ত অনেক কাজ করে থাকে। অনেক মৌমাছি মিলে এক চামচ মধু তৈরি করে। মৌমাছিরা নাচের ছন্দ ব্যবহার করে খাদ্যের উৎস সম্পর্কে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করে।
মৌমাছি কেবল একটি পতঙ্গই নয়, প্রকৃতির এক অমূল্য দান। সাধারণত দলবদ্ধভাবে বাস করে বলে এদের ‘সামাজিক পতঙ্গ’ বলা হয়। একটি মধু মৌমাছির নিজস্ব উপনিবেশে সাধারণত তিন ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মৌমাছি থাকে। শ্রমিক, ড্রোন এবং একটি রানী । একটি রানী মৌমাছি হল মৌচাকের একমাত্র স্ত্রী মৌমাছি যা প্রজনন করতে পারে।
ফুলের রস থেকে মধু তৈরি করা নির্ভর করে ফুলের রসে পানির পরিমাণ, মৌচাকে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার পরিমাণ, মৌচাকে কর্মী মৌমাছির সংখ্যা এবং ফুলের রসের সরবরাহের ওপর । মৌমাছি সব ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে না। মধুর জন্য তারা নির্দিষ্ট কিছু ফুলের রস সংগ্রহ করে।
মৌচাকের মৌমাছিরা মধু সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যায়। কিছু মৌমাছি পরাগ সংগ্রহ করে, আবার কেউ রস সংগ্রহ করে। আরেক দল মৌমাছি পানি সংগ্রহ করে। মৌমাছিরা নিজেদের খাদ্য হিসেবে ফুলের মধুগ্রন্থি থেকে সংগ্রহ করে মধুরস নামক এক প্রকার মিষ্টি তরল পদার্থ।
কর্মী মৌমাছি ফুলের কাছে গিয়ে হুল দিয়ে রস শোষণ করে। যখন একটি মৌমাছি ফুলের রস সংগ্রহ করে, তখন সেই রস তার পেটের ‘হানি স্টমাক’ নামে একটি থলি জমা রাখা। পাকস্থলী পূর্ণ হলে এর ওজন প্রায় মৌমাছিটির সমান হয়। এই পাকস্থলী পূর্ণ করতে মৌমাছিকে ১০০ থেকে ১৫০০ ফুল পর্যন্ত ভ্রমণ করতে হয়। আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে এই রসে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ পানি থাকে। আর মিষ্টি অংশ পুরোটাই চিনি বা সুক্রোজ। গড়ে একটি কর্মী মৌমাছি তার সারা জীবনে এক চা চামচের ১২ ভাগের ১ ভাগ মধু সংগ্রহ করে।
মৌচাকে ফিরে পেটের রস প্রথমে ৪ -৫টি কর্মী মৌমাছির মুখে দিয়ে দেয় এবং সেগুলো আবার ৮ থেকে ১০টি করে অল্পবয়স্ক মৌমাছির মাঝে বণ্টন করে। এবার সবাই মিলে আধা ঘণ্টা ধরে সেই রস চিবুতে থাকে। এই ধাপ শেষে তা মৌচাকের কুটুরিতে ঢালতে থাকে এবং এখানেই মধু তৈরির শেষ কাজটা শুরু হয়।
মৌচাকের চাকগুলো সব ভরে গেলে এর আর্দ্রতা ১৪ থেকে ১৮ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসতে হয়। তাই কর্মী মৌমাছিরা রাতদিন ডানা ঝাপটিয়ে বাতাস দিয়ে এর একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। মৌ-রসের পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যেতে থাকে। তখন এনজাইমের ক্রিয়ায় সুক্রোজের পরিমাণ ৫ শতাংশে পৌঁছে। তারপরও একটি দল আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডানা ঝাপটাতেই থাকে।
মৌমাছি ফুল থেকে দুই ধরনের রস সংগ্রহ করে। প্রথমটি হলো অমৃত, যা ফুলের মধ্যভাগ থেকে সংগ্রহ করা হয়। দ্বিতীয়টি হলো পরাগ, যাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। মৌচাকে ফেরার পথেই, পেটে এনজাইমের সহায়তায় মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু হয়ে যায়। একে বলা হয়, সুক্রোজ-ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ তৈরির প্রক্রিয়া । এর পর তারা মৌচাকের ওপর মোম তৈরি করে। যেন মৌচাক থেকে রস বের না হয়।
মৌমাছিদের এই কায়িক পরিশ্রমের ফল মধু। যারা মৌমাছির জীবন পর্যবেক্ষণ করে তারা কখনোই ব্যর্থতা ভেঙে পড়ে না । মৌমাছি মানে নতুন উদ্যোগে শূন্য থেকে শুরু, মৌমাছি মানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর লড়াই। মৌমাছিরা ফুলের পরাগায়ন ঘটিয়ে বনজ, ফলদ ও কৃষিজ ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।
টানা নয়, কেনাকাটা সারুন বুঝে-শুনে
সোনামনিদের নিয়ে ঝক্কিহীন শপিং যেভাবে করবেন
ঈদ শপিংয়ে সতর্ক থাকুন
ইফতারে ঠান্ডা পানি পান ঝুঁকিপূর্ণ
ইফতারে সিদ্ধ ডিমে চাঙ্গা হোন
ইফতারে আনুন ভিন্নতা: ক্রিমি ফ্রুট ফিউশন
ইফতারে হালিম রেখেছেন কি?
ইফতারে খান বেলের শরবত
রোজায় সুস্থ থাকতে দই-চিড়া খান
রোজায় সুস্থ থাকতে মেনে চলবেন যে বিষয়গুলো
গুণের শেষ নেই ক্যাপসিকামে
বিটরুট হলো ‘সুপার ফুড’, তবে...
টমেটো খান, তবে অপরিমিত নয়
প্রতিদিন অন্তত একটি গাজর খান
দারুণ উপকারী দারুচিনি
সুস্থ থাকতে আদা খান
আগাছা হিসেবে জন্মালেও পুষ্টিগুণে ঠাঁসা বথুয়া শাক
মেথি শাকের জাদুকরী প্রভাব
পাট শাকে যেসব উপকার
পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ডাঁটা শাক
রোজায় সুস্থ থাকতে চিয়া সিডের সঠিক ব্যবহার
গুণের অভাব নেই কলমি শাকে
অবহেলা করবেন না নুনে শাক
পুষ্টির খনি লাউ শাক
লাউ যেন এক মহৌষধ!
এই গরমে পাতে রাখুন পটোল
খেতে ভুলবেন না গিমা শাক
কাদা পানিতে জন্মালেও হেলেঞ্চা কিন্তু উপকারী
কচুর ছড়া বা কচুমুখির নানা গুণ
পুষ্টিগুণে ভরপুর কচুর লতি