নিউজ ডেক্স ০২ মে ২০২৪ ১০:২৩ এ.এম
ক্যান্সারের অনেক ধরন আবিষ্কার করা হয়েছে। এরকম একটি ক্যান্সার হল পাকস্থলী বা গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার, যা প্রায়শই প্রথম পর্যায়ে তেমন কোনও নির্দিষ্ট উপসর্গ থাকে না এবং শুধুমাত্র পরবর্তী বা শেষ পর্যায়ে লক্ষণ দেখা দেয়। সব ক্যান্সারের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সার সবচেয়ে জটিল। এই ক্যান্সার হলে রোগীকে প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়।
পাকস্থলী পেটের মাঝখানে থাকে এবং এটি শারীরিক কার্যকলাপের পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গ যেমন লিভার, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালী এবং কোলনের সাথে সম্পর্কিত। এই কারণে, ক্যান্সারের ভয়াবহ রূপ নেওয়ার সাধারণ একটি ঝুঁকি থেকে যায়। কিছু উপসর্গ ও লক্ষণ দেখে পাকস্থলীর রোগ শনাক্ত করা হয়। সে সম্পর্কে সবার ধারণা থাকা উচিত।
বেশিরভাগ পাকস্থলীর ক্যান্সার হল অ্যাডেনোকার্সিনোমাস যা পেটের ভেতরের আস্তরণের গ্রন্থি কোষে তৈরি হয়। ক্যান্সার সবসময় যে চরিত্রগত লক্ষণ দেয় তা কিন্তু নয়। অনেক সময়, ক্যান্সার নীরব থাকে, অর্থাৎ সামান্য বা কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেয় না। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে এটিকে সনাক্ত করা কঠিন হয়ে ওঠে।
আবার কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের উপসর্গগুলি অনেকটা নিয়মিত সংক্রমণ বা অবস্থার মতো হয় যার ফলে প্রায়ই ভুল রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে অথবা রোগ দেরিতে ধরা পড়ে। এর প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে, পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে – প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণ এবং উন্নত পর্যায়ের লক্ষণ।
প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণ
পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ের তেমন কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু, যখন ক্যান্সার বাড়তে শুরু করে এবং রোগটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন রোগী কিছু লক্ষণ অনুভব করতে পারেন যেমন:
*নাভির উপরে পেটে ব্যথা
*অম্বল
*অল্প খাবার খাওয়ার পরেই পেটের উপরের অংশে পরিপূর্ণ মনে হয়
*ঘন ঘন বদহজম
*বমি বমি ভাব এবং বমি
*খিদে কমে যাওয়া
*প্রচুর ওজন হ্রাস
এই লক্ষণগুলির পাশাপাশি নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে যেমন খিটখিটে মেজাজ, বদহজম, খাবারে অ্যালার্জি, পেটের আলসার, ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষ এর থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করেন, খুব কমই ডাক্তারের কাছে যান।
উন্নত পর্যায়ের লক্ষণ
পশ্চিমের দেশগুলির তুলনায়, গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার ভারতে খুব সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। সাধারণ ক্যান্সারের মধ্যে এটি চতুর্থ স্থানে রয়েছে এবং পুরুষদের মধ্যে এটি তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ সনাক্ত না করা হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ে পাকস্থলীর ক্যান্সার ভয়াবহ আকার নেয় এবং লিভার, ফুসফুস এবং পেরিটোনিয়ামের মতো অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ের তুলনায় পরবর্তী পর্যায়ে ক্যান্সারের লক্ষণগুলি অনেক বেশি গুরুতর হয়।
এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
*শরীরের সাধারণ দুর্বলতা এবং ক্লান্তি
*মলে রক্ত
*অনিয়ন্ত্রিত বমি
*জন্ডিস যখন ক্যান্সার লিভারকে প্রভাবিত করে
*তল পেট ফুলে যাওয়া বা তরল জমা হওয়া
*লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা কমে যায় (অ্যানিমিয়া)
রোগটি ছড়িয়ে পড়লে যে উপসর্গ দেখা দেয়-
*পেট ফেঁপে ও ফুলে থাকে
* বমি হয়
* খাদ্যগ্রহণের পর খাদ্যনালীতে ব্যথা হয়
* অল্প খেলে তৃপ্তি চলে আসে
* রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়
* শরীরের ওজন কমে যায়
* বমির সঙ্গে রক্ত কিংবা কালো পায়খানা হতে পারে
এ সমস্যাগুলো হলে অপারেশন করালেও রোগীর আয়ুকাল খুব বেশি বাড়ানো যায় না। সাধারণত চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে এ ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। নারীদের চেয়ে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হন।
কেন পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়
যে কারণে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
* প্রচুর মাদক গ্রহণ
* হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমণ
* অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* সংরক্ষিত টিনজাত খাবার
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* যারা ধূমপায়ী এবং ধুলাবালি স্থানে বাস করে তাদের মধ্যেও এ ক্যান্সার হতে পারে
* বংশগত কারণেও পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়
কী করবেন
এক সময়ে জাপানে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণে অনেক লোক মারা যেত। রোগীর মধ্যে লক্ষণীয় উপসর্গের উপর ভিত্তি করে, ডাক্তার গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার নিশ্চিত করার জন্য আপার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এন্ডোস্কোপি, বায়োপসি এবং/অথবা সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিতে পারেন। বর্তমানে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের পর যাদের হজমক্রিয়ার গোলযোগ হচ্ছে তাদের এন্ডোস্কোপি করে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করে অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়।
আমাদের দেশে রোগীরা যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার পাকস্থলীর বাইরে ছড়িয়ে পড়ে, এরফলে চিকিৎসা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। এ জন্য উপরের সমস্যাগুলো দেখা দেয়া মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নভেম্বর মাস পাকস্থলীর ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসেবে পালন করা হয়। আসুন আমরা সকলে মিলে এই রোগের কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ায়।
নবীন নিউজ/জেড
দেশের সব হাসপাতালে হচ্ছে সরকারি ফার্মেসি, মিলবে কম দামে ওষুধ
যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে দেশ
খাদ্যে ক্ষতিকর উপাদান শনাক্তে কঠোর নীতিমালার আহ্বান
অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাজেট বৃদ্ধির আহ্বান
‘নতুন মহামারির’ হানা যুক্তরাষ্ট্রে, মৃত্যুহার ৩৯ শতাংশ
বন্ধ হতে পারে সরকারি ৬ মেডিকেল কলেজ
বকশিশ না দেওয়ায় অক্সিজেন বন্ধ, নবজাতকের মৃত্যু
২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে
বরুণ ফুলের ঔষধি গুণ—প্রাকৃতিক চিকিৎসার এক বিস্ময়
স্বাস্থ্য ক্যাডারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শুরু
অব্যবস্থাপনা ও লুটপাটে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে: ডা. ফরহাদ হালিম
দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত
দেশের সব মেডিকেল কলেজে ‘একাডেমিক শাটডাউন’ সোমবার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাস শনাক্ত, মহামারির শঙ্কা
শোল্ডার সার্জারির উন্নয়নে বাংলাদেশে বিশেষ কর্মশালা
ফিরে দেখা: ‘ভারতে মেয়েদের জন্য ৬ মাসের মধ্যে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন’
আজ বায়ুদূষণে বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা
বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ঢাকার বাতাস, জানালা বন্ধের পরামর্শ!
অস্বচ্ছল চক্ষু রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান
জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি নারী প্রতি বছর মারা যান
এইচএমপিভি ভাইরাস সুরক্ষায় করণীয়
দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্তে প্রথম মৃত্যু
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের বিকল্প তিন খাবার
এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে
দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকাবাসী, মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা
দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
গোমস্তাপুরে নার্সের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু, তিন নার্স সাময়িক বরখাস্ত
দেশে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশু-বয়স্করা
শ্বাসতন্ত্রে নতুন ভাইরাস: বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা নতুন মহামারির