বুধবার ১৫ জানু ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
স্বাস্থ্য

বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা

নিউজ ডেক্স ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৪৭ পি.এম

সংগৃহীত

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এজন্য নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করলেও গত চার বছরে দেশের ম্যালেরিয়া পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বরং প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বেড়েছে।

মূলত বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলা এবং সীমান্তবর্তী ১৩টি জেলাকে ম্যালেরিয়া প্রবণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকাতেও ম্যালেরিয়াবাহী অ্যানোফিলিস মশার অস্তিত্ব মিলেছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা। 

বাংলাদেশে মশাবাহিত রোগের মধ্যে অন্যতম হল ম্যালেরিয়া। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু ছড়ায়। বাংলাদেশে মোট ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা দেখা যায়, এদের মধ্যে সাতটি প্রজাতি বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়।

কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তনের কারণে গতানুগতিক পদ্ধতি কোনও কাজে আসছে না। এভাবে চলতে থাকলে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে মনে করেন তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের পর থেকে আস্তে আস্তে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে ২০২১ সাল পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সে সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করে। যদিও আক্রান্তের হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। এমন পরিস্থিতির মধ্যে (২৫ এপ্রিল)  বৃহস্পতিবার  পালিত হচ্ছে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘আরও ন্যায়সঙ্গত বিশ্বের জন্য ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই ত্বরান্বিত করা’।

সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ১৫৮ জন ম্যালেরিয়ার রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৪৩ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে রাঙামাটিতে, ৪০ শতাংশ বান্দরবান ও ১২ শতাংশ কক্সবাজারে। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন দুই জন।

গত বছর ২০২৩ সালে দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত শনাক্ত হয় ১৬ হাজার ৫৬৭ জন, মৃত্যু হয় ৬ জনের। এর আগে ২০২২ সালে শনাক্ত হয় ১৮ হাজার ১৯৫ জন এবং মৃত্যু হয় ১৪ জনের। ২০২১ সালে আক্রান্ত হয় ৭ হাজার ২৯৪ জন ও মৃত্যু হয় ৯ জনের। ২০২০ সালে আক্রান্ত হয় ৬ হাজার ১৩০ জন ও মৃত্যু হয় ৯ জনের। অর্থাৎ, ২০২০ সালের পরবর্তী চার বছরে রোগী বেড়েছে চার গুণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ম্যালেরিয়ার কেন হয়? এর লক্ষণ কী?

সংক্রমিত অ্যানোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া শুরু হয়। পরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু লালার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এবং যকৃতে পৌঁছে। সেখানে তারা পরিপক্ব হয় এবং বংশ বৃদ্ধি করে। অ্যানোফিলিস মশা যখন অন্য কাউকে কামড়ায়, তখন তার রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়ায় এবং সেও আক্রান্ত হয়। ম্যালেরিয়াবাহী মশা মূলত সন্ধ্যা থেকে ভোরের মধ্যে কামড়ায়। চিকিৎসকরা বলছেন, কারো ম্যালেরিয়া হলে কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায়।

ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ

*ম্যালেরিয়া রোগের প্রধান লক্ষণ কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা। জ্বর ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। তবে অনেক সময় জ্বর আসা-যাওয়া করে নিয়মিত ও নির্দিষ্ট বিরতিতে, যেমন একদিন পর পর জ্বর এসে তা তিন-চার ঘণ্টা দীর্ঘ হতে পারে। এরপর ঘাম দিয়ে জ্বর কমে যায়। 
* মাঝারি থেকে তীব্র কাঁপুনি বা শীত শীত
* মাথা ধরা
* অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য
* বমি বমি ভাব ও বমি
* হজমে সমস্যা
* অত্যধিক ঘাম হওয়া
* খিচুনি
* পিপাসা কম লাগা
* ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করা
* মাংসপেশি বা তলপেটে ব্যথা
* রক্তশূন্যতা

কীভাবে মশাবাহিত রোগ থেকে সুস্থ থাকবেন

মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হবার আগেই সতর্ক হবার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ আক্রান্ত হবার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হলে মৃত্যুসহ নানা ধরণের জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং কীটতত্ত্ববিদেরা মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য কয়েকটি উপায় বলছেন, তা হলো-

* ঘুমানোর সময় মশারি খাটিয়ে ঘুমাতে হবে

* মশার কামড় থেকে বাঁচতে নানা ধরণের রিপেলেন্ট অর্থাৎ মশা তাড়ানোর পণ্য যেমন বিভিন্ন ধরণের কয়েল, স্প্রে, ক্রিম জাতীয় পণ্য ব্যবহার করা, তবে এর মাত্রা ও প্রয়োগ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

তবে এগুলো সবই মশাবাহিত কোন রোগে আক্রান্ত হবার আগের সতর্কতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

নবীন নিউজ/জেড

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের বিকল্প তিন খাবার

news image

এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে

news image

দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকাবাসী, মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা

news image

দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

news image

গোমস্তাপুরে নার্সের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু, তিন নার্স সাময়িক বরখাস্ত

news image

দেশে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত  

news image

শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশু-বয়স্করা

news image

শ্বাসতন্ত্রে নতুন ভাইরাস: বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা নতুন মহামারির

news image

ইটনায় তিন চিকিৎসকে চলছে ২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা 

news image

চিকুনগুনিয়ায় ৬৭, জিকা ভাইরাসে ১১ রোগী শনাক্ত

news image

চট্টগ্রামে আরও ৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

news image

চট্টগ্রামে আরও ৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

news image

চমেক হাসপাতালে স্যালাইন সংকট

news image

চট্টগ্রামে দিন দিন রেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রুগী

news image

জন্মনিয়ন্ত্রণে ইনজেকশন নিয়ে ঝুঁকিতে নারীরা

news image

ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু 

news image

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

news image

কুমিল্লায় ১১৭ গ্রামে আর্সেনিক আতংক 

news image

বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে শুরু হচ্ছে এইচপিভি টিকা

news image

ডেঙ্গুতে ২৫০ জনের মৃত্যু

news image

লক্ষ্মীপুরে কিশোরীদের দেওয়া হবে এইচপিভি টিকা

news image

ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১২১

news image

ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু, ১১৮৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি 

news image

ডেঙ্গুতে দুই শতাধিক মৃত্যু  : স্বাস্থ্য অধিদফতর

news image

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের ২০ শতাংশই শিশু 

news image

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

news image

ডেঙ্গুতে বেশি মারা যাচ্ছে তরুণরা

news image

সমগ্র ঢাকায় ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে : বিশেষজ্ঞরা

news image

ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন

news image

চোখে গুলিবিদ্ধ সবার সফল অস্ত্রোপচার দেশেই হয়েছে