নিউজ ডেক্স ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪৮ এ.এম
শীতের মধ্যে রোগ বেড়ে গেলেও, গরমে দেখা যায় না তেমন কোন রোগের প্রভাব। তবে গরমে রয়েছে মৃত্যুঝুঁকি। চারদিকে আজ হিট ওয়েবের রাজত্ব। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা হিসেবে। তীব্র গরমে বাড়ে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি।
১৯৯৫ সাল থেকে এই হিট স্ট্রোকের মূল উৎপাত।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রথম দেখা যায় মৃত্যু। ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে এটির মৃত্যুর হার। প্রতিবছরই দেখা যায় প্রায় ৬০০ জনের মৃত্যু এই তাপ প্রবাহে।আসলে এটির মূল কারণ কী? কী এই হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোক?
শরীরে পানি ও লবণের পরিমাণ কমে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। আমাদের শরীরের তাপ সহ্য ক্ষমতা ৩৯°C,এই তাপমাত্রার বেশি হলেই শুরু হয় শারীরিক সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা। আর এই অস্বাভাবিকতার চূড়ান্ত পর্যায় হলো হিট স্ট্রোক। এটি মূলত এল নিনোর কারণে সৃষ্ট অত্যাধিক গরমের জন্য হয়।
সাধারণত ৪০ ডিগ্রি এর বেশি তাপমাত্রা হলে হিট স্ট্রোক হতে পারে। অত্যাধিক সময়ে ধরে গরম পরিবেশে থাকলে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ধীরে ধীরে এই গরম শরীরকে করে দেয় ডিহাইড্রেটেট, ফলে দেখা দেয় পানি শূন্যতাজনিত অসুবিধাও।
তাছাড়া কিছু ওষুধ, যেমন; মূত্রবর্ধক, বিটা-ব্লকার্স কিংবা অ্যান্টি-কলিনার্জিক্স, অতিরিক্ত মদ্যপান বা মাদক সেবনও শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই ঝুঁকি শিশু, ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক মানুষ, স্থূল বা মোটা ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা এবং হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্তের বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এছাড়াও পরিশ্রমের জন্য হিট স্ট্রোকের হতে পারে,এই গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে সচেতন থাকার বিকল্প নেই। আইসিডিডিআর,বি থেকে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, হিট স্ট্রোকের লক্ষণ, প্রতিরোধে করণীয় ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ-
এ সময় মানুষ তীব্র মাথাব্যথা, ত্বক লাল হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, অজ্ঞান হয়ে পড়া, মাংসপেশির খিঁচুনি বা ব্যথা ও দুর্বলতা, শ্বাস- প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া, গরম লাগলেও ঘাম কম হওয়া, বমি হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, হাঁটতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো থাকলে বুঝতে হবে আপনি হিট স্ট্রোকের শিকার হচ্ছেন।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু করণীয়-
*দিনের বেলায় বাইরে কম বের হওয়ার চেষ্টা করুন। রোদ এড়িয়ে চলুন।
*বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা রাখুন। এছাড়া টুপি বা কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন
*হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরুন
*প্রচুর পরিমাণে পানি খান
*সহজে হজম হয় এমন সহজপাচ্য খাবার খান, বাসি বা খোলা খাবার খাবেন না
*দিনের বেলা একটানা শারীরিক পরিশ্রম করবেন না
*সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা দিন বা গোসল করুন
*প্রস্রাবের রঙ হলুদ হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন
*ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন
*বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে
তবে কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তখন কী করবেন?
আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা, ছায়াযুক্ত জায়গায় নিয়ে যান। পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন, বা বরফের পানিতে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিন। মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালুন এবং উক্ত স্থানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন।
পানিশূন্যতা রোধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ORS (Oral Rehydration Solution) বা ঠান্ডা পানি বা লবণ ও চিনি মিশ্রিত (electrolyte solution) পানি পান করান।
অবস্থা দ্রুত উন্নতি না হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। রোগীকে নিকটস্ত জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে, বা অ্যাম্বুলেন্স কল করতে হবে।
বারডেম জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসক ডা.কামরুজ্জামান নাবিল জানান, গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। সেজন্য বাইরে বের হলে পানি নিয়ে বের হওয়া জরুরি। শরীরে পানির ঘাটতি কমাতে নিয়মিত পানি খাওয়ার বিকল্প নেই।। পাশাপাশি পানিজাতীয় খাবারও খেতে হবে। পানি বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় এমন ফল তরমুজ খেতে পারেন নিয়মিত। প্রচণ্ড গরমে চলার পথে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাওয়া অনুচিত। কারণ অনেক সময় হঠাৎ ঠান্ডা পানি খেলে গলা ব্যথাসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বাইরে থেকে ঘেমে ঘরে ফিরেও সঙ্গে সঙ্গে হিমশীতল পানি খাওয়া ঠিক নয়। বাচ্চা, বয়স্ক এবং ক্রনিক রোগের রোগীদের এই গরমে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা খুব জরুরি।
হিট স্ট্রোকের ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
হিট স্ট্রোক সাধারণত ক্লাসিক, এক্সারজেশন-অ্যাসোসিয়েটেড হিট স্ট্রোক এবং হিট স্ট্রোক ফ্রম হিট ইলনেস- এই তিন ধরনের হয়ে থাকে। ক্লাসিক হিট স্ট্রোক সবচেয়ে সাধারণ ধরন, যা গরমের পরিবেশে দীর্ঘ সময় অবস্থানের কারণে হয়। গরম পরিবেশে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে এক্সারজেশন-অ্যাসোসিয়েটেড হিট স্ট্রোক হতে পারে এবং হিট স্ট্রোক ফ্রম হিট ইলনেস হিট স্ট্রোকের একটি জটিলতা, যা হালকা হিট ইলনেসের পরেও ঘটে। হিট স্ট্রোকের ফলে রোগী বা রোগীর মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি, যকৃত, পেশী ও ত্বকের নানাবিধ ক্ষতি হয়।
হিট স্ট্রোকের তীব্র তাপমাত্রা মস্তিষ্কের কোষ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। হিট স্ট্রোক হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হিট স্ট্রোক কিডনি ও যকৃতের রক্ত নালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এইসব অঙ্গগুলো বিকল করে দিতে পারে। তাছাড়া হিট স্ট্রোক রোগীর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। মনে রাখতে হবে, হিট স্ট্রোক একটি জরুরি অবস্থা যার দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। না হলে হিট স্ট্রোক মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
নবীন নিউজ/জেড
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের বিকল্প তিন খাবার
এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে
দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঢাকাবাসী, মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা
দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
গোমস্তাপুরে নার্সের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু, তিন নার্স সাময়িক বরখাস্ত
দেশে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশু-বয়স্করা
শ্বাসতন্ত্রে নতুন ভাইরাস: বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা নতুন মহামারির
ইটনায় তিন চিকিৎসকে চলছে ২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা
চিকুনগুনিয়ায় ৬৭, জিকা ভাইরাসে ১১ রোগী শনাক্ত
চট্টগ্রামে আরও ৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
চট্টগ্রামে আরও ৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
চমেক হাসপাতালে স্যালাইন সংকট
চট্টগ্রামে দিন দিন রেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রুগী
জন্মনিয়ন্ত্রণে ইনজেকশন নিয়ে ঝুঁকিতে নারীরা
ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
কুমিল্লায় ১১৭ গ্রামে আর্সেনিক আতংক
বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে শুরু হচ্ছে এইচপিভি টিকা
ডেঙ্গুতে ২৫০ জনের মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরে কিশোরীদের দেওয়া হবে এইচপিভি টিকা
ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১২১
ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু, ১১৮৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
ডেঙ্গুতে দুই শতাধিক মৃত্যু : স্বাস্থ্য অধিদফতর
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের ২০ শতাংশই শিশু
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু
ডেঙ্গুতে বেশি মারা যাচ্ছে তরুণরা
সমগ্র ঢাকায় ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে : বিশেষজ্ঞরা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন
চোখে গুলিবিদ্ধ সবার সফল অস্ত্রোপচার দেশেই হয়েছে