বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
সারাদেশ

গরিবের ‘এসি’ মাটির ঘর

নিউজ ডেক্স ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৪৮ পি.এম

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ আর গরমে অতিষ্ঠ সারাদেশের মানুষ। আর এ তীব্র গরমে মাটির ঘর যেন গরিবের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তীব্র গরমেও মাটির ঘরের ভেতরে বিরাজ করে ঠান্ডা। তাই গরিব মানুষদের জন্য এসব মাটির ঘর যেন এসি।

একটা সময় এ দেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামেই মাটির ঘর পাওয়া যেত। দেশে মাটির ঘর প্রায় বিলুপ্তির পথে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের মতো কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা শান্তির নীড় মাটির ঘর। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে মাটির ঘর বা গরিবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। 

মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসব মাটির ঘর ঠান্ডা থাকায় এক সময় এটাকে গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরও বলা হতো। এ ঘর গরমের সময় আরামদায়ক। তাই অনেক গ্রামেই বিত্তশালীদের দোতলা মাটির ঘরও ছিল। 

এ উপজেলার অনেক গ্রামে এখনও রয়েছে মাটির ঘর। উপজেলার সিদলা, ধূলজুরী, পুমদি সহ কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে কয়েকটি মাটির ঘর চোখে পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও কনকনে শীতে আদর্শ বসবাস-উপযোগী মাটির ঘর। এসব ঘর শুধু মাটির বাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরি গোলা ঘর ও কুঠি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় এক সময় প্রায় প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি। কিন্ত আধুনিকতার স্পর্শে এখন মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামীণ অর্থনীতির গতি সচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর। কয়েক বছর পর পর মাটির ঘর সংস্কারের ঝামেলা ও ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোটা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখানকার মানুষ।

উপজেলার ঢেকিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন জানান, মাটির ঘর তৈরি করতে প্রথমে এটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগত দেড় থেকে দুই মাস। এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটি দিয়ে তৈরি করা হতো। অনেকেই মাটি, বাঁশ ও টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করত।

তিনি আরো বলেন, ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির বাড়ি শত বছরেও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমানে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্টালিকার কাছে হার মানছে মাটির বাড়িঘর। মাটির ঘরে দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। মাটির বাড়িঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। মাটির ঘর বড় মাপের হয় না। গৃহিণীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়িঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়িত্বের কারণে গ্রামের মানুষ ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলার ধূলজুরী গ্রামের গৃহিণী জেসমিন বেগমের বাড়িতে আজও মাটির ঘর আছে। তিনি জানান, অর্থ সংকটে আজও তার টিনের ঘর তৈরি করা হয়নি। স্বামীর তৈরি করা মাটির ঘরটিতেই সন্তান স্বামী নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। তাদের পূর্বপুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। 

হোসেনপুর আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আশরাফ হোসেন সোহাগ জানান, মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশ মানুষ মাটির বাড়ি ভেঙে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় দীর্ঘস্থায়ীভাবে অনেক লোকের নিবাসকল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়িঘর তৈরি করেছেন। অনেকেই শখ করে আবার অনেকেই বাড়ি করার অর্থবিত্ত না থাকায় মাটির বাড়িতেই বসবাস করছেন।

নবীন নিউজ/পি

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

দিনাজপুরে গ্রেপ্তার হলেন গাইবান্ধার সাবেক এমপি

news image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের উদ্বোধন

news image

গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে পালালেন শশুর বাড়ির লোকজন

news image

থাইল্যান্ডের নারী এলেন বিয়ে করতে, হলেন ধর্ষণের শিকার!

news image

শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫

news image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জরিমানার টাকা দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২০

news image

বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রায়পুরায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন

news image

সালথায় বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

news image

চট্টগ্রামে বর্ষবরণের মঞ্চ ভাঙচুর

news image

বাঞ্ছারামপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

news image

পাঁচবিবিতে প্রকল্পের নামে জমি দখলের পায়তারা: দুদকে অভিযোগ

news image

চট্টগ্রামে এখন রাশিয়ার ৩ যুদ্ধজাহাজ

news image

'পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়'

news image

রায়পুরায় ইউপি সদস্যকে লক্ষ করে গুলি বর্ষণ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

news image

গাজীপুরে কৃষক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

news image

গজনী অবকাশ কেন্দ্রে অভিযান, ১৭ বন্যপ্রাণী জব্দ

news image

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি: হচ্ছে না ভোট, বিএনপি-জামায়াতের পদ ‘ভাগাভাগি’

news image

ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে নোয়াখালী শহরে বিক্ষোভ

news image

পুকুর পাড়ে পড়েছিল বস্তাবন্দী খণ্ড-বিখণ্ড ৩ মরদেহ

news image

আখাউড়ায় ট্রেনে তেলচুরি: চালক ও পরিচালকসহ ৮ জনের নামে মামলা

news image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আড়াই হাজার কৃষক পেলেন বিনামুল্যের সার-বীজ

news image

সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশির মৃত্যুর অভিযোগ

news image

বান্দরবানের পাহাড় থেকে ৯ জনকে অপহরণ

news image

সরাইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ আহত অর্থ শতাধিক

news image

নববর্ষ ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

news image

গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল পঞ্চগড়

news image

ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিনভর বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ

news image

মৌলভীবাজার জেলা জুড়ে প্রতিবাদে উত্তাল গাজায় গনহত্যা বিক্ষোভ

news image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ১১ সদস্যে বিশিষ্ট কমিটি গঠন

news image

ঢাকায় গাজার সমর্থনে বিক্ষোভ ও সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বান