বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
জাতীয়

ঢাকায় পানির সংকট, গভীর নলকূপ বাড়াবে ওয়াসা

নিউজ ডেক্স ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:২৬ পি.এম

নলকূপ

পানির চাহিদা পূরণে রাজধানীতে আরো ৩৩টি গভীর নলকূপ বসাতে চায় ওয়াসা। যদিও ২০২১ সালের মধ্যে চাহিদার ৭০ শতাংশ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সংস্থাটি।

রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ৩১৫ কোটি লিটার। এর মধ্যে ওয়াসা সরবরাহ করে প্রায় ২৯৮ কোটি লিটার। বাকি ১৭ কোটি লিটার পানির চাহিদা পূরণে রাজধানীতে আরো ৩৩টি গভীর নলকূপ বসাতে চায় ওয়াসা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গভীর নলকূপের সংখ্যা বাড়ানো হলে পানির দাম বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া আরো নিচে নেমে যাবে পানির স্তর। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত তিন দশকে পানির স্তর প্রায় ৫০ মিটার নিচে নেমেছে। এখন প্রতি বছর দুই-তিন মিটার নিচে নামছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এ উৎস থেকে পানি তোলা কঠিন হয়ে পড়বে। আবার ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় ভূ-উপরিস্থ পানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

পরিকল্পনা কমিশনের সূত্রমতে, নগরীতে ১৭ কোটি লিটার পানির চাহিদা মেটাতে ১৪৫টি গভীর নলকূপ বসানোর প্রস্তাব দেয় ওয়াসা। এর মধ্যে ৮০টি গভীর নলকূপ স্থাপনে ৭৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালে। কিন্তু আরো ৩৩টি নলকূপ অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প সংশোধন করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এ প্রকল্পের অধীনে ৪৪৩টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপনও করা হচ্ছে। পুনরায় চালু হচ্ছে ১৮০টি গভীর নলকূপ। নির্মাণ হবে ৩০০ পাম্পঘর। 

গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করায় প্রতিনিয়ত ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ভূগর্ভস্থ পানি বিভাগের ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ছিল ৩২ মিটার নিচে। ২০০০ সালে তা ৪১ মিটার নিচে নেমে যায়। ২০০৫ সালে হয় ৫৪ মিটার এবং ২০১৫ সালে তা ৭১ মিটার নিচে নেমে যায়। পানির স্তর ৭৪ মিটার গভীরে নেমে যায় ২০২০ সালে। তেজগাঁও এলাকায় এটা ৭৭ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে। 

গবেষণায় পূর্বাভাস দেয়া হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে পানির স্তর ৮০ মিটার নিচে নেমে যেতে পারে। আর ২০৩০ সালে তা ৮৫ ও ২০৩৫ সাল নাগাদ ১০০ মিটার নিচে নেমে যতে পারে। 

ভূগর্ভস্থ জলাধারে বালিকণার ফাঁকে ফাঁকে পানি জমে থাকে। এ পানি বৃষ্টিপাতসহ ভূপৃষ্ঠের নানা উৎস থেকে ভূগর্ভস্থ জলাধারে প্রবাহিত হয়। জলাধারগুলোয় বর্ষা মৌসুমে যে পরিমাণ পানি জমে, সেটাকেই সাধারণত রিচার্জ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কিন্তু ঢাকা শহর কংক্রিটের আচ্ছাদনে ঢেকে যাওয়ায় এবং খোলা মাটির অংশ কমে যাওয়ায় পানি রিচার্জ ঠিকমতো হচ্ছে না। আগে ঢাকার চারপাশ এলাকা থেকে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানি রিচার্জ হতো। কিন্তু এখন ঢাকার পাশে প্রচুর শিল্প গড়ে উঠছে। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজেরাই পানি উত্তোলন করছে।

ফলে এসব পানিও এখন আর রিচার্জ হতে পারছে না। আর প্রতি বছর পানির স্তর দু-তিন মিটার নিচে নামছে। এতে ওয়াসা আরো গভীরে তাদের নলকূপ বসাতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পানির দাম বাড়বে। তাছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে ঢাকায় গভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ১৯৭। ২০০০ সালে হয় ৩০০টি। ৪২৩টিতে দাঁড়ায় ২০০৫ সালে। এরপর ২০১৫ সালে ৭৪০ ও ২০২০ সালে ৮০০টিতে দাঁড়ায়। ২০২৫ সালে দাঁড়াবে ৯০৬টিতে।
এছাড়া নগরীর পার্শ্ববর্তী নদীর পানি ওয়াসার কারণেই দূষিত হয়। এ কারণে কাছাকাছি কোনো পানির উৎস পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে নদী গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার।

এদিকে ওয়াসার পক্ষ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৫ সালে নেয়া সায়েদাবাদ ফেজ-৩ প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এতে প্রতিদিন ২৩ কোটি লিটার পানি পাওয়া যেত। প্রকল্পটির ব্যয় শুরুতে ছিল ৩ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। এখন বেড়ে ৭ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ৫ শতাংশ। ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পটির। 

২০১৪ সালে পদ্মা থেকে পানি আনার জন্য নেয়া হয় পদ্মা-জশলদিয়া প্রকল্প। ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত এ প্রকল্প ২০১৯ সালে উৎপাদনে আসে। প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার পানি পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মিলছে ২৬ কোটি লিটার।

জানা গেছে , জমি অধিগ্রহণ ও পানির লাইন নির্মাণে রাস্তা কাটার অনুমতি না পাওয়ায় কাজ এগোতে পাারেনি ওয়াসা।

নবীন নিউজ/জেড

এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা

news image

নিজেদের সম্পদ পাকিস্তানের কাছে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ

news image

ঢাকাসহ ৭ জেলায় রাতের মধ্যে ধেয়ে আসছে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়!

news image

ফের চালু আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই ইউনিট, বাড়লো সরবরাহ

news image

দেশব্যাপী আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

news image

মায়ানমার থেকে দেশে ফিরেছে ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’

news image

উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন পেলেন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব

news image

৫ বছর সরকারকে ক্ষমতায় রাখার বিষয় আমি কিছু বলিনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

news image

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ টিউলিপের

news image

ড্রোন শো জানিয়ে দিল ইতিহাসের নানা পর্ব

news image

বাংলাদেশে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

news image

কারাগার থেকে গণহারে মুক্তি রাষ্ট্রের জন্য হুমকি: আবু হানিফ

news image

হানাহানি চাই না, শান্তির দেশ চাই: সেনাপ্রধান

news image

বাংলাদেশের পাসপোর্টে 'একসেপ্ট ইসরায়েল' শর্ত পুনর্বহাল

news image

ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়া হল

news image

যার যার মত করে বৈশাখ উদযাপন করুন: প্রধান উপদেষ্টা

news image

আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু হলো ১৭ ঘণ্টা পর

news image

আদানির কেন্দ্র থেকে সরবরাহ বন্ধের কারণে লোডশেডিং বাড়তে পারে

news image

আমাদের হৃদয়ে বাস করে এক-একটা ফিলিস্তিন: মিজানুর রহমান আজহারী

news image

দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ফিলিস্তিনিদের পাশে বাংলাদেশ রয়েছে: শায়খ আহমাদুল্লাহ

news image

মার্চ ফর গাজা: লাখো মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হলো 'ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন'

news image

শেখ হাসিনার দোসররা চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়েছে: ফারুকী

news image

অ্যামনেস্টি উদ্বেগ জানালো মেঘনা আলমকে নিয়ে

news image

মার্চ ফর গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের ঢল

news image

সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিপুকে 'সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ চোর' বললেন সিদ্দিকী নাজমুল

news image

দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত

news image

এবার 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নয়, 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'

news image

বাংলাদেশ পুলিশের নতুন লোগো প্রকাশ

news image

পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল

news image

দেশে হুমকির মুখে নারীর অবস্থান ও নিরাপত্তা: মহিলা পরিষদ